আমাদের পরিস্থিতি

আমাদের পরিস্থিতি -  রথীন ঘোষ
এক ধনী কৃষক এক বার বোম্বাই ঘুরতে গিয়েছিলো সেবার তার অনেক ফসল হয়েছিল তাই ভাবল, যাই একটু ঘুরে আসি, তাই সে বোম্বাই ঘুরতে গেলো সেখানে গিয়ে অনেক ঘুরা ঘুরি করল আধুনিক সব জিনিষ, খুব পাশ থেকে উপভোগ করল পাঁচ তারা হোটেলে থাকলো সে কেসিনো তে জুয়া খেলতে বসলো, সৌভাগ্য ক্রমে অনেক টাকা জিতে গেলো সে প্রায় ১ কোটি টাকা জিতে গেলো সে ভাবল জুয়ার টাকা কিছু একটা ভালো জিনিষ কিনে ফেলি ৮০ লাখ টাকা দিয়ে সে মার্সিডিস বেঞ্জ গাড়ি কিনলো মার্সিডিস বেঞ্জ গাড়ি কিনে বাড়ি নিয়ে আসল প্রতিদিন সে মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িতে করে তার জমিতে দেখাশুনা করার জন্য যায় আর আসে এদিকে প্রায় এক বছর হয়ে যায় তাই গাড়ির ডিস্ট্রিবিউটার ভাবল, এখনও একটাও সার্ভিস করাতে আসল না। তাই গাড়ির মালিককে ফোন করল, কি ব্যাপার আপনার গাড়ি কেমন চলছে ?- খুব ভালো। -আপনার ওখানে কোন ভালো মেকানিক পেয়েছেন?- না মেকানিক কেন?- না মানে এক বছর হয়ে গেলো তো, আপনি ফার্স্ট সার্ভিস সেকেন্ড সার্ভিস কিচ্ছু করান নি তাই।– সার্ভিস ? সার্ভিস কেন করাব, আমার গাড়ি দিব্যি চলছে, আমি প্রতিদিন গাড়িতে করে আমার জমিতে যাওয়া আসা করি আমার গাড়ি ভালো আছে। খবর কোম্পানির কাছে গেলো
 কোম্পানি ভাবল বাঃ দারুন ব্যাপার তো, একটা খুব ভালো প্রডাক্ট বেরিয়েছে, তাই নিজের ইঞ্জিনিয়ার কে দেখতে পাঠালো। ইঞ্জিনিয়ার অনেক কষ্ট করে ঠিকানা টিকানা জোগার করে সে কৃষকের বাড়ি সন্ধ্যা বেলা পৌছলো। কৃষক বলল, ‘ঠিক আছে আমার গাড়ি দেখতে এসেছেন আজ রাতটা থাকুন সকালে জমিতে এক সঙ্গে যাব তখন গাড়ি দেখিয়ে দিবসকালে কৃষক ও ইঞ্জিনিয়ার দুইজনেই গাড়িতে বসলেন গাড়ি চলতে শুরু করল। ইঞ্জিনিয়ার ভদ্রলোক বললেন, কি ব্যাপার গাড়ির ইঞ্জিন চালু করলেন না? কৃষক বললেন, দরকার কি, বাড়িতে যখন বলদ আছে, তাহলে আর তেল পুড়াবার দরকার কি? কৃষক তার মার্সিডিস গাড়ির সামনে দুটো বলদ জুড়ে দিয়েছে। আর বলদ টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
তাই আমাদের মানসিকতাতেও কোথাও না কোথাও বলদ লাগানো আছে তাই আমরা, সরকারী স্কুলে চাকরী করা পছন্দ করি কিন্তু বাচ্চাকে সরকারী স্কুলে পড়াতে চাই না। মাদকতা বিরোধী প্রবন্ধ লিখতে পারি (নাম্বার পাওয়ার জন্য), কিন্তু মাদক নেশা মুক্ত হতে পারি না। পণপ্রথা নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে পারি (নাম্বার পাওয়ার জন্য), কিন্তু বিয়ের পিড়িতে পণ চাই। আমরা ট্রাফিক সিগনাল না মানলেও বিড়ালের রাস্তা কাটা মানি। এই রকম আরও অনেক কিছু। তাই আমাদের মেন্টালিটিতে জতদিন গরু বাঁধা থাকবে ততদিন আমাদের কিছু হবার নয়।
আমাদের প্রত্যেকের মস্তিষ্ক হল একটা মার্সিডিজ বেঞ্জ, আমরা জীবনে যা চাই তাই করতে পারব, কোন অসুবিধা নেই
জীবনে আমাদের বড় কিছু হওয়ার জন্য কোন কিছুই বাধা হতে পারে না, হ্যাঁ জোর দিয়েই বলছি কোন কিছুই বাধা হতে পারে না আপনার এই সৃষ্টিতে জন্মই হয়েছে, বিশেষ কিছু হওয়ার জন্য না আপনার সামাজিক স্থিতি, না পারিবারিক স্থিতি, না শিক্ষাগত জোগ্যতা না সৌন্দর্য কোন কিছুই আপনার সাফল্যের জন্য আপনার বাধা হতে পারবে না।
একটা কথা আমাদের ভালোকরে বুঝে নিতে হবে যে ভাগ্য বলে কিছু, নেই। আমার জীবনে যা কিছু ভালো কিম্বা খারাপ তার জন্য কেবল কেবল শুধু কেবল আমি দায়ী। হ্যাঁ এই সত্যটা হৃদয় দিয়ে যত তাড়াতাড়ি আপনি সাফল্যের সিড়ীর দিকে এগিয়ে যাবেনঅবশ্যই জীবনের ভালো দিক গুলোর জন্য যদি কারও অবদান থাকে, তাহলে তার প্রতি সদা কৃতজ্ঞ থাকা আমাদের নৈতিক কর্তব্য, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে নইলে আমাদেরই উন্নতিতে বাধা হবে। কৃতজ্ঞতার প্রকাশ করতে কখনও পিছপা হবেন না, নইলে তাই আমাদের পেছনে টেনে ধরবে।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভালো চিন্তা

আপনি ও আপনার অবচেতন মনের শক্তি

সতী নারী