ভালো চিন্তা

ভালো চিন্তা - রথীন ঘোষ একবারের এক গুরুকুলের আশ্রমের ঘটনা বলছি, সেই অনেক শিষ্য ছিল। প্রত্যেকে নিজেদের সাধনা খুব পরিশ্রমের সঙ্গে করত। কিন্তু যুগের হাওয়ায় তাদের ভেতর কিছু খারাপ অভ্যেস ঢুকে যায়। তারা সবসময় প্রত্যেকে নিজেদের শ্রেষ্ঠ বলে জাহির করত ও প্রত্যকের নিন্দা করতকিন্তু তারা বুঝতে পারছিল না যে এই যুক্তি-তর্ক-সমালোচনার নামে একে অপরের নিন্দা করা তাদের নিজেদের স্তর নামিয়ে দিচ্ছিল। তারা কোথাও উপদেশ দিতে যখন যেত, রাম কথা, কৃষ্ণ কথা, ভাগবত উপস্থাপনা খুব সুন্দর হত কিন্তু মানুষের জিবনযাত্রায় কোন পরিলক্ষন ছিল না, গুরুদেব সব বুঝতে পারছিলেন তাই একদিন সন্ধ্যায় সব শিষ্যদের ডাকলেন, বললেন আগামী কাল কিছু আলু নিয়ে এসো একটু বড় বড় আলু। পরের দিন সব শিষ্য আলু নিয়ে হাজির হল। এবার প্রত্যেকটা আলুতে তোমরা যাদের পছন্দ কর না তাদের নাম লিখে নিয়ে এসো। সব গেল তাড়াতাড়ি আলু গুলোতে তাদের দৃষ্টিতে খারাপ লোকদের নাম লিখে নিয়ে এলো।কারো ৫টা কারও ৬টা কারও আরও বেশী লাগল। এবার গুরুদেব বললেন, এই আলু গুলকে নিয়ে চলে যাও, আগামি ১০ দিন এই আলু গুলোকে একদম হাত ছাড়া করবে না। এমনকি ঘুমাবার সময়, চান করার সময়, শৌচের সময় সর্বদা নিজের সঙ্গে রাখবে ১০ দিন পর দেখা করবে।
এদিকে শিষ্যরা গুরুদেবের কথা শোনার পর, গুরু আজ্ঞা তাই অস্বীকার ও করতে পারছে না। প্রথম ৩-৪ দিন তো ভালো মতোই কাটল কিন্তু তারপর চান করার সময় আলুগুলো ভিজে যাওয়াতে পচা শুরু হয়ে গেল। আলুতে দুর্গন্ধ বেরতে লাগল, তারা করো কাছে যাওয়ার অবস্থায় ছিল না। যেখানেই যেত সবাই দূর দূর করে তারিয়ে দিতে এত দুর্গন্ধ। অনেক কষ্টে তারা ১০ দিন পার করে গুরুদেবের কাছে হাজির হল।গুরু দেব জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে বতস্য তোমাদের এইকোদিন কেমন কাটল, শিষ্যরা বললেন, গুরুদেব আর বলেন না, আলুর দুর্গন্ধে আর কোথাও যেতে পারিনা। আমার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আমরা সঠিক ভাবে নিশ্বস ও নিতে পারছি না। গুরুদেব বললেন তোমরাও যখন নিজের ভিতরে অন্যের ব্যপারে খারাপ চিন্তা নিয়ে ঘুরে বেরাও, দুর্গন্ধ তো তখন ও বেরও, কিন্তু তোমরা তা বুঝতে পারো না। তাই তোমাদের কেউ কথা শোনে না, উপদেশ শোনে না। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আপনি ও আপনার অবচেতন মনের শক্তি

সতী নারী