ঋষির পাখিকে শিক্ষা দান
ঋষির
পাখিকে শিক্ষা দান - রথীন ঘোষ
এক ঋষি
নিজের আশ্রমে গুরুকুল চালাতেন, বহু ব্রহ্মচারী সেখানে জ্ঞান অর্জনের
জন্য থাকতেন। তারা প্রত্যেকে ঋষির কাছে জ্ঞান অর্জন করে, দিনে দিনে জ্ঞানী হচ্ছিল।
কিছু পাখি
প্রতিদিন সকালে খাবারের প্রত্যাশায় আশ্রমে আসত। ঋষি পাখিদের খাবার খাইয়ে দিনের শুরু
করতেন। একদিন ঋষি পাখিদের বললেন, ‘আমার মতো লোকের কাছে তোরা খালি খাবার খাবি কেন? তোরা জ্ঞান অর্জন কর। জ্ঞান তোদের সমূহ বিপদ হতে রক্ষা করবে’। পাখিরা ভাবল জ্ঞানী পুরুষ যখন বলছেন
তাহলে জ্ঞান নেওয়া উচিৎ।
তখনকার
দিনে জ্ঞান শ্লোক আকারে ছড়াতে দেওয়া হত। তাই ঋষি পাখিদের জ্ঞান দিলেন ‘ব্যাধ আসবে, জাল পাতবে,
খাবারের টোপ দিবে, লোভে তাতে পড়বে না’।
প্রতিদিন
সকালে এসে পাখিরা সুর করে পরতে লাগলো ‘ব্যাধ আসবে, জাল পাতবে, খাবারের টোপ দিবে,
লোভে তাতে পড়বে না’। একবার ঋষি কিছু দিনের জন্য বাইরে গেলেন, পাখিরা নিজেদের পড়া
চালিয়ে গেল, ‘ব্যাধ আসবে, জাল পাতবে, খাবারের টোপ দিবে, লোভে তাতে পড়বে না’।
এদিকে
এক শিকারী এসেছে জাল পেতে পাখিদের জন্য খাবার ছড়িয়ে দিয়েছে, কি করবে বেচারা শিকারি
ব্যাধ ওটাই ওর জীবিকা, ওকে তো পাখি ধরতেই হবে।
পাখিরা
খাবারের জন্য জালের উপর গিয়ে বসল মহানন্দে খাবার খেতে শুরু করল, পেট ভরে যাওয়ার
পর, যেই উড়তে গিয়েছে, এই যা! কি হল না সবাই জালে ফেসে গিয়েছি, এখন উপায়, ঋষির
দেওয়া সেই মন্ত্র, ‘ব্যাধ আসবে, জাল পাতবে, খাবারের টোপ দিবে, লোভে তাতে পড়বে না’।
সবাই সুর করে সেই মন্ত্র আওড়াতে লাগল।
দেখুন
গল্পের মূল এইখানে এসে আমি আবার ফেঁসে গেলাম দুটো রাস্তা নং এক শিকারি আসল,
পাখিদের জাল থেকে খুলে, খাঁচায় ভরল, মহানন্দে নিয়ে চলে গেল। নং দুই সকলে এক সঙ্গে
মিলে উড়ে গেল। হ্যাঁ ঠিক সবাই এক সঙ্গে উড়ে যাওয়া সম্ভব? অনেক দার্শনিক আমায়
বলেছেন পাখির ক্ষেত্রে সম্ভব, মানুষের ক্ষেত্রে নয়।
কিন্তু
আমি অনেক ব্যাধের কাছে গিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়েছি, তারা বলেছে না এমন কোন দিনও হয়
নি। পাখিদের বাঁচার এক মাত্র রাস্তা লোভে না পরা।
আমাদের
কানকির বাড়ি তখন চারি দিকে জংগলে ঘেরা ছিল, বাড়ির পেছনে ছিল আম বাগান তাতে অবস্য
লিচু, কাঠাল ও করমচা গাছ ও ছিল। মাঝে মাঝে তখন পাখী শিকারী আসত তারা জাল পাতত,
তাদের কাছে একটা খাচা থাকত, সেই খাঁচাতে একটা ঘুঘু পাখি। খাঁচাটা বাঁশের, উপরে
একটু কালো কাপড় দেওয়া। এবার শিকারী জাল পাতত, খাঁচাটাকে একটা উঁচু যায়গায় রাখত।
কিছু দূরে গিয়ে। শিকারি একবার ঘুঘু পাখির ডাক দিত, ব্যস খাঁচার পাখিটা ডাক দেওয়া
শুরু করে দিত, তার ডাক শুনে কিছুক্ষনের মধ্যে চারিদিক থেকে আরও ঘুঘু পাখি এসে জালে
বসত তারা ধরা পরত। ওরা উড়তে পারত না, কারন জালটা নিচে খুটি দিয়ে বাধা থাকত।
আমার
ছোট বেলার সেই পরিবেশটা এখনও বদলায়, নি। পার্থক্য এটাই জংগলটা এখন কংক্রিটের।
খাঁচাটা এখন টিভি, খাঁচার ঘুঘুটা সচিন, সলমান, অক্ষয় কে নেই।
আমার
বাংলার এক কৃতী সাহিত্যিক বিজ্ঞাপন করছেন বিশেষ এক নোট বই যদি উনার সময় থাকত, হা
সাহিত্যিক মহান আপনি দুদিনের মেনেজমেন্টের ছেলের বুলি আওড়াচ্ছেন আপনিও জানেন,
আমরাও জানি, আপনার সময় যদি ঐ নোট বই থাকত, আর আপনি যদি নোট বই পড়তেন, এটা নিশ্চত যে আপনাকে আর সৃষ্টিশীল
হতে হত না।
জ্যোতিষটাও একটা জাল, সমাজে জ্যোতিষের কুপ্রভাব হলে
আমি কেন আমার সভ্যতা সংস্কৃতিকে অপমান করি বুঝে পাই না। আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে কি
কেউ এত জ্যোতিষ তান্ত্রিকের কাছে যেত, না বৈদিক যুগে যেত, যদি যেত তাহলে গান্ধারী
তার শত পুত্রকে বাচানোর জন্য একবার নিশ্চয়ই জ্যোতিষ তান্ত্রিকের কাছে যেত। না
কৃষ্ণ অর্জুনকে কোন যজ্ঞ করিয়েছিল। না না আমি প্রাচিন কোন হিন্দু রাজাকেও জ্যোতিষ
তন্ত্রের এই ব্যবহার করতে শুনিনি। কিছুলোক নিজের সভ্যতা সংস্কৃতির প্রতি অশ্রদ্ধা
দেখাছচ্ছে। জার্মানরা আজ এত উন্নত, তার কারন তারা নিজেদের সভ্যতা সংস্কৃতির প্রতি
খুব শ্রদ্ধাশীল, জাপান তাই, আমেরিকা তাই, চীন তাই, মাও যদি দেশের কথা বলে
কমিউনিস্ট আন্দোলন করতে পারে, আমরা পারি না কেন। আমার এখানে
দেশের কথা বললেই কেন ডান পন্থী বা গেরুয়া তকমা দেওয়া হয়।
বাম,
ডান, সাদ, লাল, নিল, সবুজ সবাই দেশের কথা নিজের সভ্যতা সংস্কৃতি কে ভালোবাসি না
কেন। আমরা কেউ কেউ নিজেদের উপাসনা পদ্ধতি পাল্টাতে পারি, কিন্তু সভ্যতা সংস্কৃতিকে
নয়। যদি কোন দেশ তার নিজের দেশ মাতৃকা কে প্রতি দিন লাঞ্ছিত করে, সে হলো আমার ভারতবর্ষ ।
ও দেশ
মা আমার, আমরা তোমার অবুঝ সন্তান, নিজেদের মধ্যে দলা দলি করে তোমায় প্রতিনিয়ত
ক্ষতবিক্ষত করছি। তোমার দু হাত কেটে দিয়েছি। মাথাটা কাটার জন্য উদ্দত। মা আমার
তোমার অর্ধেক সন্তান তোমায় মা বলতে চায় না। মা আমার, বুঝি এ তোমার কত বড় জ্বালা, সন্তান যদি তার নিজের মা কে, মা না বলে। বিরোধিতার জন্য শুধু বিরোধিতা। রাজনৈতিক
সভা সমাবেশে বন্দে মাতরম বলতে অসুবিধা নেই মা, কিন্তু স্কুলে বলা যাবে না।
আমার
মা, তুমি আমাদের পথ দেখাও, কবে তোমার সমস্ত সন্তানেরা, তোমার আদর্শ সন্তান হবে। কবে ‘ভারত
আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে’। বন্দে মাতরম, জয় হিন্দ।
প্রথম অংশের
পর দ্বিতীয় অংশ
ঋষির পাখিকে
শিক্ষা দান
নং দুই
সকলে এক সঙ্গে মিলে উড়ে গেল। হ্যাঁ ঠিক সবাই এক সঙ্গে উড়ে যাওয়া সম্ভব? অনেক
দার্শনিক আমায় বলেছেন পাখির ক্ষেত্রে সম্ভব, মানুষের ক্ষেত্রে নয়।
আমরা আগের
অংশে দেখেছি পাখি তো পারেই না, তো মানুষ কোন……।।
তাও মানুষ
কেন সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে প্রতি নিয়ত। প্রতিবাদ বা বিরোধিতার আন্দোলন ঘৃণা বিদ্বেষ জন্ম নেওয়ার
সম্ভবনা বেশী আপনারা মিলিয়ে নিতে পারেন। নইলে আমদের মাদার বলতেন না “তোমরা যদি আমাকে যুদ্ধ বিরোধী মিছিলে যেতে বল, আমি যাব না, আমায় শান্তির মিছিলে ডেকো”। আমার চৈতন্য দেব মিথ্যা যিনি প্রতিবাদের মিছিল করেন নি, তিনি প্রেমের মিছিল করেছিলেন। আমার পবিত্র কোরান শরীফের দেখানো পথ
মিথ্যা, যেখানে আল্লা প্রেমের ও শান্তির পথ বেছে নিতে বলেছেন। হ্যাঁ আমার কিছু ভাই হিংসার পথ বেছে নিয়েছেন, তাহলে তা বন্দ হবে কি করে?
আমার ভারত
বর্ষ মা, আমার বিরাট বিশাল হৃদয় আমার মায়ের। আফগানিস্তানে যখন শমিমা কে যৌন দাসি করা হয় বা পাকিস্তানে মলালা কিম্বা গৌরীর উপর
আক্রমণ হয়, তখন ও আমার অখন্ড ভারত মায়ের হৃদয় কাঁদে। চিটাগাঙ্গে যখন
গর্ভবতী
নারী ঊষা রানী মণ্ডলের উপর অত্যাচার নেমে আসে। ঠিক তখনও আমার মা ততটাই কাঁদে, এত টুকু কম বেশী নয়। এই অনুভবটা সকলে করুন, আমার মায়ের চোখে জল। মা আমার কতদিন কাঁদবে। আপনি একবার চোখ বন্ধ করে ভাবুন, মা আমার ক্ষত বিক্ষত, চোখে জল। হায় ভগবান, সবাই নিজের ছেলে মেয়েদের মানুষ করতে বসেছি, আমরা নিজেরাই মানুষ হতে পারি নি।
তাই অন্ধ
অন্ধকে পথ দেখাচ্ছে আর সবাই প্রতি নিয়ত গর্তে পরছি।
আমরা সন্ত্রাস
দূর করার কয়েকটা পদ্ধতি বের করেছি। সন্ত্রাস বাদের বিরোধিতায় মানুষ কে সচেতন করেছি, আইন করেছি, প্রতিবাদ আন্দোলন করেছি। তাতে কি হয়েছে সন্ত্রাস বাদ আরও মজগুত হয়েছে। হায় মহান বুদ্ধিজীবি জীব আমরা সব, হিউম্যান সাইকোলজিটা কি শুধু আমরা উদর পূর্তির জন্য শিখেছিলাম। কোন জিনিষের বিরোধিতা করা মানে, সে জিনিষ কে সমাজে দৃঢ় করা।
তাহলে রাস্তা
কি? লাখ কথার এক কথা তাহলে রাস্তা কি?
উত্তর প্রেষণা
। হ্যাঁ প্রেষণা, যা জাগাবার জন্য ছিল যত মত তত পথ। নমাজ, জাকাত, রোজা, বা পুজা ব্রত উপোষ কিম্বা সাধনা। আমরা আসল সমস্যা না ধরে, ধর্মেরই বিরোধিতা করতে লেগে গেলাম। হায় কত মূর্খ আমরা। যে ধর্ম মানুষকে ধারন করে রাখবে, তাকে ভুলে, জ্যোতিষ তন্ত্র বিশ্বের সব থেকে বড় পুজা এই নিয়ে মেতেছি আমরা।
দেখুন মূর্খতার
চরম সীমা আমাদের, আমাদের জীবন যাপনে ধর্ম আমার ইচ্ছা
মত। পুজা গুলোকে ফেস্টিভাল রূপ দিয়ে মস্তান রাজের হাতে খড়ি হয়। আমিও আমার গ্রাম কানকি ষ্টেশন মোড়ের পুজা কমিটীর সেক্রেটারী হয়ে যাই। ধীরে ধীরে আমার শক্তি বেরে যায়। আমার সঙ্গে কয়েক জন ভাই ও জুটে যায়, ব্যাস আর কি এখানে টাকা কালেকশন করতে হবে, ঐ কন্ট্রাক্টারকে ধরতে হবে, না দিলে মারতে হবে। সব কেমন যেন সেট হয়ে যায়। নিজের একটা সাংস্কৃতিক জগতের পরিচয়
ছিল। প্রায় প্রতি মাসে অনুষ্ঠান, আগে যেখানে বছরে একটা অনুষ্ঠান করলে
পরের বছরও পেন্ডেল ওয়ালার পয়সা বাকি, এখন আমাদের দলের ধ্রুবর হোটেলে রাতে মদ মাংসের ব্যবস্থা, তা জোগানোর নিত্য নতুন পরিকল্পনা।
আরও বড়
কিছু হতে পারতাম ভোলা, বা ক্ষেত্রি বা আন্তা কিন্তু তার আগেই
প্রেষণা জেগে যায়। অনেক কষ্টে ফেরত আসি। আজ মনে করলে কান্না পায়, আমার মা বাবার কি অবস্থা হয়েছিল সেদিন, কিভাবে দিন কাটত। বুকের ধন যদি সমাজের যম হয়ে দাঁড়ায়।
আজ প্রতি
পাড়ায় পাড়ায় এই রকম সমাজের যমে ভর্তি। এমনিতে দেখা যায় না, জমি কিনুন বাড়ি কিম্বা ফ্ল্যাট। সমস্যা যম কে সন্তুষ্ট করাটা নয়, আমি যদি চল্লিশ লাখ টাকা দিয়ে একটা সম্পত্তি কিনি তাহলে
পঞ্চাশ হাজার বা লাখ টাকা দিলাম না হয়। কিন্তু এদের পরিকল্পনা বাড়তে থাকে, ইট, বালী, সিমেন্ট সব জায়গা থেকে।
আমার লেখা
গুলো হয়ত অনেকের ভালো লেগেছে। যে হারে ইন বক্সে মেসেজ ও মোবাইলে ফোন আসছে, আমি উৎসাহ পেয়ে ছিলাম কিন্তু আমার অন্তরমন বলল না কোথাও
না কোথাও এরা বলছে আন্দোলন প্রতিবাদ সংগঠন। কিন্তু আমরা জানি আমাদের অন্তরমনের
চেতনা জানে এগুলো দিয়ে কিছু হবে না। প্রতিবাদী নয় সমঝদার, বুঝরুক হতে হবে।
ঠিক আছে
ধর্ম ছারাও চলা যাবে কোন অসুবিধা নেই, সম্পূর্ণ পশ্চিমা সভ্যতা গ্রহণ করি। না আমি কোর্ট প্যন্ট টাই পরে সেমিনার
করে বেরাই আর বউ শাঁখা পোলা সিঁদুরের ঘেরা টোপে আবদ্ধ থাক। তাহলে যে জন্ম নিবে সেও কনফিউজড। আমি প্রতি মাসে পাটায়া বা নেপাল বা গোয়া যাই আর বউ ফেসবুক চ্যট করলেও দোষ। আমি অনেক নারী মুক্তি আন্দোলনের প্রতিক দেখেছি যারা দাসত্বের চিহ্ন বয়ে বেরাচ্ছেন, তারা আমাকে বলন, আমার ধর্ম। আমি বললাম এটা কেমন কথা দিদি, সেদিন শান্তিদার মৃত্যুর শোকসভাতে আমাকে
একই নাটকের দলের সদস্য হওয়ার কারনে বলতে বললেন, আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করে শুরুই করেছিলাম, আপনি থামিয়ে দিলেন, বললেন রথীন বাবু কথাটা উইথদ্র করুন, আমরা আত্মায় বিশ্বাস করি না। ও আপনি শাঁখা সিদুর পড়বেন, পলা টাও পড়বেন, লাল বাবার দেওয়া তাবিজ কবচ ও পড়বেন আর আমার আত্মার কথা বলাতেই দোষ।
আমি দায়িত্ব
নিয়ে বলছি, আমি বেদ পুরাণ উপনিষদ বিধিবদ্ধ ভাবে, আমার ধর্মের এ যুগের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির কাছে অধ্যয়ন ও সাধনা
করেছি। রাজ্যাভিষেক, পট্টাভিষেক ও পূর্ণাভিষেক সম্পূর্ণ
করেছি। শাঁখা সিদুর পরাটা না পরাটা হিন্দু ধর্ম নয়। আমরা যদি আমাদের মায়েদের মন, মানসিকতা ও শরীর শক্তিশালী না করি তাহলে আমরা সুস্থ সন্তান
পাব কি করে।
আবার একটা গল্প বলছি কি শুনবেন তো কথা দিচ্ছি ভালো লাগবে। ও একটা নয় চারটা গল্প একের পর এক। ওহ কাজের দেরী হবে ঠিক কোন তাড়া হুড়ো নেই, বউ ছেলের যদি আপনার দরকার হয় আগে ওদিকে যান। আমার গল্পটা সেভ বটমে দিয়ে রাখতে পারেন কিম্বা আমাকে আপনাদের দাস মনে করে, ফ্রেন্ড রিকুইয়েস্ট পাঠিয়ে দিন। আমি সব সময় আপনাদের ঘরের ছেলে হয়ে এই
কথা গুলো বলে যাব। কথা দিচ্ছি সমাজে বিশাল উলট পালট হবে প্রতি জায়গায় প্রেমের বীজ পোতার কাজ চলছে। আমরাও সকলের সাথে সাথী হয়ে আপনার এই দাসানুদাস ভাই এর সঙ্গে চলুন, ভালো জায়গায় নিয়ে যাব, সেখানে পাবেন সব পেয়েছ, যা আমি পেয়ে অনাবিল আনন্দ যা আমার কাছে
আছে।
আমি তখন
শিবকাশিতে থাকি লুংগি, দেশলাই এর জন্য বিখ্যাত জায়গা। আমি অবশ্য শক্তি ট্রেডিং কর্পোরেশনে কাজ করতাম। মালিক ছিলেন কে চেরমকানি। একদিন উনি আমাকে এক মন্দিরে নিয়ে যান সালটা ছিল ২০০০ ।
তখন বড়
বড় নোকিয়ার মোবাইল হত, আমার হাতে সেরকম একটা। মন্দিরের পুজারী বললেন মোবাইল গুলো বাইরে জমা রাখতে হবে। রাখলাম কি আর করব, নিয়ম যখন করেছে। মাস ছয়েক পরে আবার যাই পুজারী বলেন
এবার সুইচ বন্দ রাখলেই হবে। কিছুদিন আগে একজনের মোবাইল হারিয়ে যায়। ঠিক দুবছর পর আবার ঐ মন্দিরে যাওয়ার সুযোগ হয়, এবার বাইরে লেখা ছিল মোবাইল দিয়ে, ভগবানের মুরতির ছবি নিতে গেলে ২০ টাকা দিতে দিতে হবে।
কদিন আগে
চেরমাকানি সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল তিনি বললেন এখন ওই মন্দিরে ভগবানের সঙ্গে সেলফি নিতে
২০০ টাকা।
প্রথম গল্প
শেষ,
দ্বিতীয়
গল্প
কদিন আগে
আমি অফিস থেকে বেরলাম, ভাবলাম খেয়ে যাব হুমায়ুন দার হোটেলে। রাস্তায় একটা ধাবা। আমাকে খুব যত্ন করে খাওয়ায়। আন্তরিকতা টা এত বেশী, আমি ভুলতে পারি না। বিভিন্ন মুসলিম বাড়িতে গিয়ে দেখেছি, আতিথেয়তাতে ভর পুর। আগে গ্রামে ঘোরার সময় রাত হলে, আমি ইচ্ছা করে মুসলিম গ্রাম খুজতাম। সুন্দর জীবন শৈলী সুন্দর আতিথেয়তা। আমি এরকম অনেক গ্রাম জানি যেখানে সবাই দরিদ্র, ঘরের চাল দেখলেই বোঝা যায়, কিন্তু নিজেদের সেই কষ্টে অর্জিত পয়সা দিয়ে মাস্টার রেখেছে। মাষ্টারও আজ এর বাড়ি কাল ওর বাড়ি করে খায় আর সকাল সন্ধ্যা পড়ায়।
তো হুমায়ুনদা
হ্যাঁ, ওর ওখানে বসেছি আমাকে ওর যা যা শ্রেষ্ঠ, তরকা রূটি পালং আলু সেদ্ধ ধনে পাতার চাটনি দিয়েছে আমি
খাচ্ছি এমন সময় একটা সাদা স্ক্রপিও গাড়ি থেকে চারটা ছেলে নামল। নেমেই হোটেলে ঢুকে চারিদিকে খুজছে। দু তিন জন লোক আরও খাচ্ছিল। হুমায়ুনদা আর ওর ছেলে তো আসুন বসুন
করছে। শেষে আমি জিজ্ঞেস করলাম কি অসুবিধা, আপনারা কি খুজছেন
ওরা বলল, কোন ঠাকুরের ছবি আছে কি না খুজছি, আমি বলি কেন ওরা বলে, না হোটেলটা হিন্দুর না মুসলমানের, আমি বলি মানুষের ওরা আবার বলে না না হিন্দু না মুসলমান। ওরা যখন এই কথা গুলো বলছে মনে হচ্ছে
যেন কেউ আমার গালে চড় মারছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল, হুমায়ুন দা আমাকে বললেন ওদেরকে রোজদিনই এই কথা টা কারও না কারও কাছে শুনতে হয়।
তবে হুমায়ূন
দা বললেন ওর ওখানে বেশির ভাগ হিন্দু লোকেরা খায় আর পাশের হোটেল যাদবের সেখানে বেশীরভাগ
মুসলমানেরা খায়।
গল্প তিন ;
আমার ঠাকুরদা
যখন ছিলেন তখন বাড়িতে মুরগীর মাংস রান্না হত না। আলাদা কড়াই ছিল একটা, বাড়ির কম বয়সী ছেলেরা রাখাল এরা মিলে বাড়ির বাইরে রান্না
করত, ঘর থেকে ভাত নিয়ে যেত আর কলা পাতায় বসে খাওয়া হত।
ঠাকুরদা
মারা যাওয়ার পর মা একই রান্না ঘরে আলাদা বাসনে রান্না করে দেয়। আমার বৌদি ও দিদি একই ধারা কিন্তু আমার বোন বা বউ বাজার থেকে নিজে মাংস কিনে এনে
রান্না করে খেতে পারে।
গল্প নং
চার
আগে বিয়ে
দিতে গেলে বলত নিজের কালচারের মধ্যে। আমাকেই ৩২ বছর বয়সে ১৮ বছরের মেয়েকে বিয়ে করতে হয়েছে, আমার মা বাবাকে খুশী করার জন্য। আমরা উত্তর দিনাজপুরের সুরজাপুরী ভাষার
লোক আদি বাড়ি পাশেই বর্তমান বিহারের বারশোই স্টেশনের শেখ পুরা গ্রামে। যে গ্রামে আমরা ১৭ ঘর হিন্দু ২২৫ ঘর মুসলিম। আজ অব্দি কোন সমস্যা নেই। ঠাকুরদা ঠাকুরমা দুজনেই বাড়িতে একটা স্কুল চালাতেন। ব্রিটিশ সরকার বেতন দিতেন কিন্তু স্কুল
ঘর ছিল না, ঠাকুরদা তার বৈঠক খানাতে স্কুল চালাতেন। ঠাকুরদার ১৩৫ বিঘা জমি ছিল। তার মধ্যে ৭০ বিঘা দানের। আগে ছাত্ররা পড়াশুনা করলে জমি দান দেওয়ার
রেওয়াজ ছিল। ঐ ৭০ বিঘা জমি মুসমানদের ছেলে মেয়েদের পড়িয়েই পেয়েছিলেন। ঠাকুরদা বাংলাতেই পড়াতেন কারন, জায়গাটা তখন বাংলা রি ছিল পরে ১৯৩৬ এ বিহার হয়। ধীরে ধীরে স্কুল গুলোর মিডিয়াম চেঞ্জ হয়। আমার প্রেমিকা টিয়া বাঙাল বলে বাড়ি
থেকে বিয়ে দেয় নি। আমি সাহসী ছিলাম কিন্তু টিয়া ওর মা বাবাকে অমান্য করতে চায় নি। আমার প্রেমিকা সুলগ্না ঘটি কিন্তু যেহেতু কলকাতার তাই আমার বাড়ী থেকে রাজী হয় নি।
তার পর
বলা হয় ঘোষ হলে হবে, আমরা গোয়ালা ঘোষ, গোয়ালা ঘোষই হতে হবে, অন্য চলবে না। তার পর হল বাঙাল ঘটি যাই হোক কি জাতের মেয়ে হতে হবে, ‘জাতের মেয়ে কালো ভালো, নদীর জল ঘোলা ভালো’। এখন সব বলছে সতগোপ হোক, কায়স্থ হোক গোয়ালা হোক ঘোষ হলেই হল। তার পর একবার আমার এক কাকিমা আমাকে বলে, দেখ রথীন তুই একটা ভালো ছেলে দেখ সিডিউল
কাস্ট কিম্বা ট্রাইব জাতে না হয়। আমি কিছু দিন পর বললাম কাকিমা একটা কলেজের প্রফেসর, দেখ না রথীন একটু যদি হয়ে যায়, কাকিমা নম সুদ্র বাঙাল, কি হয়েছে রথীন ওরা কি মানুষ না, কারও কি গায়ে লেগে থাকে, আর আমার জেলে দিয়ে কি হবে, আমার মাছ দরকার কিন্তু কাকিমা পার্ট টাইম, কামিমা বলল বেতন কত? আমি বললাম পাঁচ হাজার কাকিমা বলল, না রথীন একদম না, নিজেদের একটা মান সম্মান নেই। শেষ পর্যন্ত সিডুল কাস্টের সঙ্গে, বিয়ে দিব, না রথীন টুকিকি আমাদের বানের জলে ভাসে এসেছে।
এখন দেখছি একটা অন্য শ্লোগান চলছে। রথীন একটা ছেলে দেখ, আমাদের স্ট্যাটাসে খাওয়াতে পারে কি
না দেখিস। হিন্দু হলেই হবে। খালি মুসলমান না হলেই হল।
পরিস্থিতি
শুধু জাত পাতে নেই, এর পর আসবে হাত কাস্তে ফুল মূল। তার পর ফর্সা কালো কত কিছু।
লেখাটা
চলবে কিন্তু আজকের ফিনিশিংটা এটাই পাখীরা বুদ্ধি করে উড়ে গেলেও জালেই থাকবে, জাল থেকে বেরতে পারবে না। তাই আমার ভারত মা স্বাধীন হয়েও আবার
পরাধীন। জগত জননী মা আমার জন্ম ভূমি মা আমরা সবাই তোমার সন্তান, যারা বোঝেনা তাদের তুমি বোকাও দিতেও চাও না মারা তো দুরের
কথা, মা তুমি শুধু বল ওতই যখন বুঝিস তাহলে সবাইকে বোঝা।
আমি জানি
মা আরাকন থেকে বার্মা একটাও লোক যদি দুঃখে থাকে তাহলে তুমি দুঃখ পাও। না মা তুমী আর কেঁদো না, তোমার সন্তানরা আর অপরের প্রতি কাদা
ছোরা ছুরি করছে না মা, সবার প্রেষণা জেগেছে মা। সেই অন্তরমনের শক্তি তুমি মা জগত জননী মহামায়া, জন্মভুমি মা আমার, আমি তোমায় ভালোবাসি, “কেউ আমার মাথার দিব্যি দেয় নি, নিজের মধ্যেই চেপে বসেছে গো, তোকে নিয়েই লিখতে হবে তোর জন্যই” হিন্দুত্বের কথা, ইসলামের কথা, বুদ্ধের কথা, আমি জানি মা তুমি গোলাপ কিম্বা পদ্মের গোছা ভালো বাস না, মা তুমি চাও এমন ফুলদানি যাতে একটি ফুল যাতে আড়ালে না
থাকে।
আপনাদের
সকলের কাছে আমাদের সকলের মায়ের শান্তির জন্য আমার হ্রদয়ের অন্তরস্থ স্থল হাত জোড় করে
বলছি আপনারা আমার দেশ মার জন্য কিছু করুন, আপনাদের গানে কবিতায় গল্পে সাধারণ কথা বারতায় ফুটে উঠুক বন্দে মাতরমের কথা।
মা তুঝে
সালাম, বন্দে মাতরম, জয় হিন্দ!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন